*** আব্বাসি খেলাফত***

আজ সুলতান আব্দুল হামিদের মৃত্যু বার্ষিকী

উসমানী খিলাফতের সর্বশেষ শক্তিশালী শাসক সুলতান আব্দুল হামিদ খান ১৯১৮ সালের আজকের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন। আজকের বিশ্বরাজনীতি বুঝতে হলে আমীরুল মুমিনীন সুলতান আব্দুল হামিদ খানকে বুঝতে হবে। ভবিষ্যতে মুসলমানদের মুক্তি কিসে আসবে বুঝতে গেলে আব্দুল হামিদকে বুঝতে হবে। আজকের দুনিয়া কিভাবে আজকের দুনিয়া হল তা বুঝতে গেলে উসমানীদের(অটোমানদের) বুঝতে হবে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্লট সাজানো হয় কয়েকটা বিষয়কে কেন্দ্র করে।
১)জার্মান সাম্রাজ্য ও উসমানী খিলাফতের ধ্বংস
২)পৃথিবীর জ্বালানী সম্পদের একচেটিয়া কর্তৃত্ব দখল
৩)পৃথিবীর মূল বাণিজ্যপথগুলোর একচেটিয়া দখল
৪)ইহুদীদের ইউরোপ থেকে একটা সেইফ এক্সিটের পথ বের করে দেয়া
৫)ইস্তাম্বুল ও জেরুসালেম দখল করে হাজার বছরের ক্রুসেডে একের পর এক পরাজয়ের বদলা নেয়া

এই পরিকল্পনাগুলোর কোনটাই বাস্তবায়ন সম্ভব হত না যদি সুলতান আব্দুল হামিদ খান ক্ষমতায় থাকতেন। কারন, সুলতান আব্দুল হামিদ থাকলে শরীফ হুসাইন উসমানীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতেন না। শরীফ হুসাইন ছিলেন সুলতান আব্দুল হামিদের প্রায় অন্ধ ভক্ত। এমনকি, সুলতানকে যখন ফ্রিম্যাসন ইয়াং টার্কসরা নির্বাসনে পাঠায়, শরীফ হুসাইন তাকে মক্কায় এসে খিলাফত ঘোষনার অনুরোধ করেন। কিন্তু আব্দুল হামিদ জানতেন, এই প্রচেষ্টা আসলে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতকেই বাড়াবে। সুলতানকে ক্ষমতা থেকে অপসারনের পর টার্কসদের সাথে শরীফ হুসাইনের সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। জাতীয়তাবাদী টার্কসদের সাথে আরব, বার্বার বা বা কুর্দ কারোই সম্পর্ক ভাল ছিল না যা উসমানী খিলাফতকে ভেতর থেকে ধ্বংস করে দেয়।

আব্দুল হামিদ ক্ষমতায় থাকলে খুব সম্ভবত প্রথম বিশ্বযুদ্ধই হত না। তিনি এই যুদ্ধ স্রেফ এড়িয়ে যেতেন কোন না কোন উপায়ে। এর আগে কয়েকটা ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় প্রতিবারই তিনি যখন কোন উপায় নেই তখন যুদ্ধ এড়াতে সক্ষম হয়েছিলেন। কাটা দিয়ে কাটা তুলতে ওস্তাদ আব্দুল হামিদ বহুবার ব্রিটেনকে রুশদের বিরুদ্ধে, জার্মানদের ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এবং রুশদের অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয়ানদের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দিয়েছিলেন। মূলত তখন এদের কামড়াকামড়ির ওপরেই নির্ভর করতো উসমানী খিলাফাহর টিকে থাকা।

আরব বিদ্রোহ না হলে এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধ না হলে মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় পুরোটাই থাকতো উসমানীদের নিয়ন্ত্রনে। ফলে তেল ও গ্যাসসম্পদের নিয়ন্ত্রন থাকতো মুসলিমদের হাতে। জেরুসালেম ও ইস্তাম্বুল এবং সুয়েজ, বাবেল মান্দেব, বসফরাস-দার্দানেলস, শাত-ইল আরবের দখলও উসমানী খিলাফতের হাতে থাকতো।
আব্দুল হামিদ খান ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় জায়োনিস্টরা ফিলিস্তিনে জমি কিনতে পারে নাই, এবং তিনি তা করতেও দিতেন না।

এই কারনে, আমি বিশ্বাস করি, সুলতান আব্দুল হামিদ খান ক্ষমতায় থাকলে আজকের দুনিয়া কখনো আজকের চেহারা পেত না। আধুনিক ইউরোপের মননের গহীনে থাকা ক্রুসেডার মানসকে সবচেয়ে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় উসমানী খিলাফতের ইতিহাস পড়লে।

আল্লাহ তার কবরকে জান্নাতের বাগিচা করে দিন, আর আমাদের ভেতর থেকে উত্থান ঘটান নতুন কোন আব্দুল হামিদের। collected from Muhammad Imran khan

Leave a comment