মহাস্রষ্টা আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিন মানবদেহ এবং
তার ইন্দ্রিয় গুলোকে এমন ভাবে সৃষ্টি করেছেন যে।।
এই ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে পৃথিবীর যাবতীয় বস্তুু অবস্তুুকে নিজের নাগালের ভেতর ধরা যায়,এমন কি যা চোখে দেখা যায় না তা আল্লাহ বান্দার ভিতর সৃষ্টি করেছেন।।
যেমন,আমরা চক্ষু দিয়ে আলোঁ ধরি,
ত্বক দিয়ে শীতাতাপ ধরি।
কান দিয়ে শব্দ ধরি।
নাক দিয়ে ঘ্রাণ ধরি।
জিহ্বা দিয়ে স্বাদ ধরি ইত্যাদি।।
কোন ইন্দ্রিয় যদি বিকল থাকে,তাহলে তার যে কাজ ছিল সে তা ঠিকমতন করতে পারে না যেমন, নাকে যদি সর্দ্দি থাকে তাহলে সে গোলাপের সুগন্ধি আর ধরতে পারে না।।
কানের পর্দায় যদি কোন গন্ডগোল হয় তাহলে সে কোন মধুর সঙ্গিত শুনতে পায় না,চোখে যদি পুরু পর্দা পড়ে তাহলে সে আলোঁ দেখতে পায় না।।
কিন্তুু এই নাকের সর্দ্দি যদি বিশেষ প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে দেয়া যায় তবে সে সুগন্ধ ধরতে পারে এবং কানের মধ্যে ঔষধ প্রয়োগ করলে সে কানে শুনতে পায়।
চক্ষু অপারেশন করে দিলে সে আবার পরিস্কার দেখতে পায়।।
যে মহাইন্দ্রিয় মানুষের ভেতর সুপ্ত থেকে পঞ্চ ইন্দ্রিয় গুলোকে পরিচালনা করে, সেই ইন্দ্রিয়টিতে অর্থাৎ আত্মাটিতে যদি লোহার মত জং ধরে থাকে,
তাহলে তা দিয়ে মহাস্রষ্টা আল্লাহকে ধরা যাবে না।।
কারন একমাত্র “আত্মা” দিয়েই আল্লাহকে ধরা যায়।
আমাদের শরীর অসুস্থ হলে আমরা বলি আমার শরীর ভালো না,আর মনে অশান্তি থাকলে বলি আমার মন ভালো না।। এ থেকে বোঝা যায় মানুষের মধ্যে দুইটি জিনিস বিদ্যমান আছে। একটি হলো শরীর বা দেহ,অপরটি হলো রূহ বা আত্মা।।
দেহ হইতে আত্মা যখন চলে যায় তখন দেহের কোন দাম থাকে না, দেহের নাম হয়ে যায় লাশ, একটি মানুষ যখন জন্মগ্রহণ করে তখন আমরা তার নাম রাখি।।
যেমনঃ রহিম,করিম ইত্যাদি। আর যখন সে মারা যায় তখন বলি এটা রহিম বা করিমের লাশ,এ থেকে বোঝা যায় লাশের ভিতর থেকে যে জিনিসটি বেরিয়ে গেলো সেটাই ছিল প্রকৃত রূপে রহিম ও করিম বা তাদের আত্মা।।
মানুষ মাথা হতে পা পর্যন্ত যতখানি লম্বা,
ডান হাতের অঙ্গুলির অগ্রভাগ হইতে
বাম হাতের অঙ্গুলির অগ্রভাগ পর্যন্ত
ততখানি পাশ, সুতরাং মানুষ দৈর্ঘ্য ও
প্রস্থে সমান সমান।।
যে বস্তু দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের সমান সে বস্তুই গোলাকার।
সেই বস্তুই বিন্দু সাদৃশ্য, মানুষ বিন্দু রূপে সর্বত্র বিদ্যমান।। অর্থাৎ বিন্দুই মানব রূপ
,প্রথমতঃ মাতৃগর্ভে বিন্দুই নিপাতিত হয়,
সেবিন্দুই ক্রমশঃ বৃহত্তর হয়ে মানবব রূপ
ধারন করে,অদৃশ্য বলে এই বিন্দু
ভৌতিক চোখে দেখা যায় না।।
কিন্তু জ্যোতির্ময় বিন্দু সর্বত্র বিরাজমান
তা জ্ঞান চক্ষু দ্বারা পরিলক্ষিত হয়, ভৌতিক বিন্দু রক্ত, কণিকা, আর জ্যোতির্ময় বিন্দু হলো আল্লাহর নূর।।
ভৌতিক বিন্দু দ্বারা দেহ গঠিত আর জ্যোতিময় বিন্দু দ্বারা গঠিত আত্মা,অনেক সময় দেখা যায় ,দেহ বিছানায় শোয়া থাকলেও আত্মা অন্যত্র চলে যায়, যাকে আমরা সপ্ন বলে থাকি।।
স্বপ্নে যে রূপ নিয়ে আমরা চলাফেরা করি তাই মানুষের আসল রূপ,জাগরনে সেই রূপের সাথে দেহরূপ একাকার করতে পারলেই সেই —
মানুষ আরেফ বা আল্লাহ ওয়ালা হয়ে যায়।।
